লেখক সম্পর্কে (About Him)
- বাংলা
- English
১৮৯৪ সালের ১২ই সেপ্টেম্বর, বাংলা ১৩০১ সালের ২৮ ভাদ্র, কল্যাণীর কাছে মুরাতিপুর গ্রামে মামার বাড়িতে বাংলার তথা বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কথা-সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম। ১৮৫৯ সালের নীল বিদ্রোহের কিছু আগে বিভূতিভূষণের পিতামহ কবিরাজ তারিণীচরণ বসিরহাট সংলগ্ন পানিতর থেকে বনগাঁর বারাকপুর গ্রামে বসবাস শুরু করেন।বিভূতিভূষণের বাবা মহানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় বনগাঁ উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার পরে কাশী থেকে সংস্কৃত ও হিন্দু পুরাণে শাস্ত্রী উপাধি পেয়েছিলেন। গ্রামে গ্রামে কথকতা করে সংসার নির্বাহ করতেন তিনি। তাঁর প্রথম স্ত্রী হেমাঙ্গিনী নিঃসন্তান ছিলেন।দ্বিতীয় স্ত্রী মৃণালিনীর পাঁচ সন্তানের মধ্যে জ্যেষ্ঠ বিভূতিভূষণ।
বিভূতিভূষণের শিক্ষার শুরু গ্রামের পাঠশালায়। শাগঞ্জ কেওটায় প্রসন্ন মোদকের পাঠশালা, মুরাতিপুরে বিপিন মাস্টারের পাঠশালা, বনগাঁ বারাকপুরে হরি রায়ের পাঠশালা এবং বাগবাজারে আপার প্রাইমারি পাঠশালাতে কিছুদিন করে পড়ার পর ১৯০৮ সালে তিনি বনগাঁ হাই স্কুলের পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হন এবং ওই স্কুল থেকে ১৯১৪ সালে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক পাশ করেন। স্কুল পাশ করার আগেই অবশ্য তাঁর পিতৃ বিয়োগ ঘটে এবং এর ফলে তাঁকে বিশেষ অর্থকষ্টে পড়তে হয়। এক অবস্থাপন্ন ডাক্তারের বাড়িতে গৃহশিক্ষকের কাজ করে তাঁকে অতি কষ্টে দিন চালাতে হতো। এই অর্থকষ্ট আরও বেড়ে গেল যখন তিনি কলকাতায় গিয়ে রিপন কলেজে ভর্তি হলেন। দারিদ্র্যের সঙ্গে যুদ্ধ করে তিনি ১৯১৬ সালে ওই কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে আই এ এবং ১৯১৮ সালে ডিস্টিংশন সহ বি এ পাশ করেন। বি এ পাশ করার পর তিনি দর্শন নিয়ে এম এ ক্লাসে ভর্তি হয়েছিলেন, আইন পড়তেও শুরু করেছিলেন। কিন্তু অর্থাভাব এবং অন্যান্য কারণে কোনওটাই সম্পূর্ণ হয়নি।
বিএ ক্লাসের প্রথম বর্ষে পড়ার সময় বসিরহাটের মোক্তার কালীভূষণ মুখোপাধ্যায়ের চোদ্দ বছরের কন্যা গৌরীর সঙ্গে বিভূতিভূষণের বিয়ে হয়। দিনটি ছিল ১৯১৭ সালের ১৫ই অগস্ট। পরের বছর জুলাই মাসে, বি এ পরীক্ষা শেষ হয়ে যাবার পর, বিভূতিভূষণ কিশোরী স্ত্রীকে নিয়ে বারাকপুরে তাঁর পিতৃপুরুষের বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। কিন্তু তাঁর প্রথম দাম্পত্য খুব বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। সেই নভেম্ভর মাসে, অর্থাৎ চার মাস পরে, বাপের বাড়ি পানিতরে বেড়াতে গিয়ে গৌরী নিউমোনিয়ায় (মতান্তরে কলেরায়) মারা যান।
প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর পড়াশোনা ছেড়ে বিভূতিভূষণ শিক্ষকতার পেশা গ্রহণ করেন। বাকী জীবনটা তিনি এই পেশাতেই নিযুক্ত ছিলেন, যদিও মাঝে মধ্যে তাঁর শিক্ষকতায় কিছু সময়ের জন্য ছেদ পড়েছিল। তাঁর শিক্ষকতা শুরু হয় পঞ্চাশ টাকা মাসিক বেতনে, হুগলির জাঙিপাড়া স্কুলে ১৯১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। ১৯২০ সালের মে মাস পর্যন্ত ওই স্কুলে কাজ করার পর তিনি জুন মাসে সোনারপুরের কাছে হরিনাভি হাই ইংলিশ স্কুলে যোগ দেন। ১৯২২ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত বিভূতিভূষণ এই বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছিলেন।
বিভূতিভূষণের মধ্যে একজন উদগ্র ভ্রমণপিপাসু বাস করত। তাঁর এই ভ্রমণপিপাসু সত্তা, যা হয়ত তাঁর বাবা মহানন্দ তাঁর মধ্যে চারিয়ে দিয়েছিলেন, তাঁকে স্কুলের কাজ ছেড়ে ‘গোরক্ষণী সভা’র ভ্রাম্যমান প্রচারকের কাজ নিতে উদ্বুদ্ধ করে। এই কাজ নিয়ে পূর্ববঙ্গ, ত্রিপুরা, আসাম ও আরাকান অঞ্চলে ১৯২২ সালের শেষ অব্দি ব্যাপক ভ্রমণ করেন তিনি― কখনও ট্রেনে, কখনও জলপথে, বেশির ভাগটাই পায়ে হেঁটে।
১৯২৩ সালের জানুয়ারি মাসে কলকাতায় ফিরে এলেন বিভূতিভূষণ। ফিরে এসে তিনি পাথুরিয়া ঘাটার জমিদার খেলাতচন্দ্র ঘোষের বাড়িতে গৃহশিক্ষকের কাজ নিলেন। এর এক বছর পরে খেলাতচন্দ্র উত্তর বিহারের অরণ্য অঞ্চলে তাঁর বিস্তীর্ণ জমিদারি দেখাশোনা করার জন্য এস্টেট ম্যানেজার করে বিভূতিভূষণকে ভাগলপুরে পাঠান। ভাগলপুর বাস বিভূতিভূষণের জীবনের এক বিরাট গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এই ভাগলপুরে বসেই বিভূতিভূষণ তাঁর প্রথম কালজয়ী উপন্যাস ‘পথের পাঁচালি’ লিখেছিলেন। এই ভাগলপুরেই তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল বিচিত্রার সম্পাদক উপেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায় এবং মৌচাকের সম্পাদক সুধীরচন্দ্র সরকারের। বস্তুত, ভাগলপুরে থাকার সময় অরণ্য এবং অরণ্যবাসী দরিদ্র মানুষদের সংস্পর্শ তাঁকে এক দশক পরে আর এক মহৎ উপন্যাস ‘আরণ্যক’ লিখতে অনুপ্রাণিত করে।
বিভূতিভূষণের প্রথম প্রকাশিত গল্প ‘উপেক্ষিতা’ ১৯২২ সালের প্রথম দিকে প্রবাসীতে প্রকাশিত হয়েছিল। এর পরের ছ’বছরে তাঁর আরও কয়েকটি গল্প প্রবাসী এবং বিচিত্রায় প্রকাশিত হয়। বিভূতিভূষণের প্রথম দিকের দশটি গল্প, যার সাতটি প্রবাসী এবং তিনটি বিচিত্রায় বেরিয়েছিল, একসঙ্গে নিয়ে তাঁর প্রথম ছোট গল্পের সংকলন ‘মেঘমল্লার’ প্রকাশিত হয় ১৯৩১ সালে, ‘পথের পাঁচালি’ বই হয়ে বেরনোর দু’বছর পরে, যদিও ‘মেঘমল্লার’-এর গল্পগুলো ‘পথের পাঁচালি’র আগে লেখা।
১৯২৮ সালের এপ্রিল মাসে বিভূতিভূষণ আবার কলকাতায় ফিরে এসে ৪১ নম্বর মির্জাপুর স্ট্রিটে তাঁর পুরোনো মেসবাড়ি প্যারাডাইস লজে থাকতে শুরু করলেন। এখানে থাকতে এসে সহ-মেসবাসী হিসেবে পেয়ে গেলেন তাঁর সহপাঠী নীরোদচন্দ্র চৌধুরিকে। প্রকাশের অভিপ্রায়ে ১৯২৮ সালের এপ্রিল মাসেই ‘পথের পাঁচালি’র পাণ্ডুলিপি বিচিত্রার দপ্তরে পাঠালেন বিভূতিভূষণ। সে পাণ্ডুলিপি প্রায় সঙ্গে সঙ্গে গৃহীত হল। বিচিত্রার পাতায় ‘পথের পাঁচালি’ জুলাই, ১৯২৮ থেকে সেপ্টেম্বর, ১৯২৯ অব্দি ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হয়। প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে ‘পথের পাঁচালি’কে পাঠকদের একটা বড় অংশ সাদরে গ্রহণ করেছিল, তবু, বিচিত্রায় ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশের পরে কোনও প্রতিষ্ঠিত প্রকাশক বই হিসেবে ‘পথের পাঁচালি’ ছাপতে রাজি হচ্ছিলেন না।হয়ত নতুন লেখকের প্রথম উপন্যাস ছাপার ব্যাপারে তাঁদের জড়তা ছিল। এই সময় নীরোদচন্দ্র সজনীকান্ত দাসের সঙ্গে বিভূতিভূষণের আলাপ করিয়ে দেন। সজনীকান্ত তাঁর নতুন প্রকাশনা রঞ্জন প্রকাশালয় থেকে ১৯২৯ সালের ২রা অক্টোবর ‘পথের পাঁচালি’ প্রকাশ করেন। দিনটি ছিল মহালয়া। সঙ্গত ভাবেই বিভূতিভূষণ পিতৃতর্পণ হিসেবে তাঁর বাবার স্মৃতিতে উৎসর্গ করেন ‘পথের পাঁচালি’। সজনীকান্ত-র স্ত্রী সুধারাণীর একটি লেখা থেকে আমরা জানতে পারি, ‘পথের পাঁচালি’র প্রথম সংস্করণের জন্য সজনীকান্ত বিভূতিভূষণকে তিনশ টাকা সম্মান-দক্ষিণা দিয়েছিলেন।
বিভূতিভূষণের দিনলিপি অনুযায়ী, ১৯২৯ সালের ১৪ই নভেম্বর কলকাতার ইডেন গার্ডেনে বসে ‘পথের পাঁচালি’র অনুক্রমিক উপন্যাস ‘অপরাজিত’র মূল কাঠামোটি মনে মনে চূড়ান্ত করেন বিভূতিভূষণ। এর এক মাস পর থেকে, অর্থাৎ ডিসেম্বর, ১৯২৯ থেকে, প্রবাসীতে ধারাবাহিক ভাবে বেরোতে শুরু করে ‘অপরাজিত’। শেষ হয় ১৯৩১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। পুস্তকাকারে ‘অপরাজিত’র প্রথম খণ্ড প্রকাশিত হয় ১৯৩২ সালের জানুয়ারি মাসে, দ্বিতীয় খণ্ড দু’মাস বাদে, মার্চে। প্রকাশক এবারেও সজনীকান্ত দাস। ‘পথের পাঁচালি’ এবং ‘অপরাজিত’ প্রকাশিত হবার কিছুদিনের মধ্যেই বই দুটি নিয়ে পাঠক মহলের বৃহদাংশে প্রবল উৎসাহ দেখা যায়। ১৯৩৩ সালের এপ্রিল মাসে রবীন্দ্রনাথ বিভূতিভূষণকে তাঁর সঙ্গে প্রশান্তচন্দ্র মহালনবিশের বরাহনগরের বাড়িতে দেখা করতে বলেন। সেই মাসেই কবির লেখা ‘পথের পাঁচালি’র সমালোচনা প্রকাশিত হয় পরিচয় পত্রিকায়।
‘পথের পাঁচালি’ এবং ‘অপরাজিত’র পর বাঙালি পাঠক সমাজকে একটার পর একটা মহৎ উপন্যাস উপহার দিয়ে গেছে বিভূতিভূষণের লেখনী। এই উপন্যাসগুলির মধ্যে ‘দৃষ্টিপ্রদীপ’ (১৯৩৫), ‘চাঁদের পাহাড়’ (১৯৩৮), ‘আরণ্যক’ (১৯৩৯), ‘আদর্শ হিন্দু হোটেল’ (১৯৪০), ‘অনুবর্তন’ (১৯৪৩), ‘দেবযান’ (১৯৪৪) এবং ‘ইছামতি’ (১৯৫০) অধিক উল্লেখযোগ্য। একই সঙ্গে তাঁর আশ্চর্য সব ছোটগল্পের সংকলন ― ‘মেঘমল্লার’ (১৯৩১), ‘জন্ম ও মৃত্যু’ (১৯৩৭), ‘কিন্নরদল’ (১৯৩৮), ‘তালনবমী’ (১৯৪৪), ‘উপলখণ্ড’ (১৯৪৫), ‘ক্ষণভঙ্গুর’ (১৯৪৫) এবং ‘অসাধারণ’ (১৯৪৬) ― বাংলা সাহিত্যের মণিমুক্তো গুলির মধ্যে চিরস্থায়ী জায়গা করে নিয়েছে। বিভূতিভূষণ নিয়মিত দিনলিপি লিখতেন। তাঁর দিনলিপিগুলি ― ‘স্মৃতির রেখা’ (১৯৪১), ‘তৃণাঙ্কুর’ (১৯৪২), ‘ঊর্মিমূখর’ (১৯৪৪), ‘উৎকর্ণ’ (১৯৪৬) ― প্রত্যেকটি মহৎ সাহিত্য।
উত্তর বিহারে থাকার অভিজ্ঞতা বিভূতিভূষণের মধ্যে বন-জঙ্গলের প্রতি একটা গভীর ভালবাসা তৈরি করে দিয়েছিল। এতটাই যে, জঙ্গলের টানে নিয়মিত তাঁকে বিহারের ঘাটশিলা ও গালুডি অঞ্চলে যেতে হতো। শেষ পর্যন্ত ঘাটশিলায় তিনি একটা বাড়ি কিনে ফেললেন। প্রথম স্ত্রীর স্মৃতিতে তার নাম রাখলেন গৌরীকুঞ্জ। তাঁর জঙ্গল ভ্রমণের ইতিবৃত্তগুলি ‘বনে পাহাড়ে’ (১৯৪৫) এবং ‘হে অরণ্য কথা কও’ (১৯৪৫) এই দুই গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে।
১৯৪০ সালের ১৭ই ডিসেম্বর বনগাঁয় বসবাসকারী আবগারি বিভাগের অফিসার ষোড়ষীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের কন্যা রমাকে বিভূতিভূষণ বিয়ে করেন। দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে ১৯৪২ সাল থেকে পাকাপাকি ভাবে বনগাঁ-বারাকপুরে আবার থাকতে শুরু করেন বিভূতিভূষণ। তবে যখনই সময় পেতেন ঘাটশিলা চলে যেতেন যেখানে তাঁর অনুজ নুটবিহারী ডাক্তারি করতেন এবং স্ত্রী যমুনাকে নিয়ে থাকতেন। ১৯৪৭ সালে বিভূতিভূষণের একমাত্র সন্তান তারাদাসের জন্ম হয়।
১৯৫০ সালের ১লা নভেম্বর ঘাটশিলায় আকস্মিক হৃদরোগে বিভূতিভূষণের মৃত্যু হয়।
Bibhutibhushan Bandyopadhyay, one of the greatest novelists writing in the Bengali language and certainly one of the finest in the literary history of the world, was born on 12th September, 1894 in his maternal residence in Muratipur near Kalyani. Bibhutibhushan’s grandfatherTarinicharan, a successful Ayurved, left his ancestral home in Panitar, Basirhat and settled in the village of Barakpur in Bongaonsometime before 1859 when the Indigo Revolt broke out in Bengal. Bibhutibhushan’s father Mahanando went to school in Bongaon and later to Varanasi to learn Sanskrit and the Hindu Scriptures. He was a traveling narrator, a wandering minstrel earning his bread by narrating stories from Hindu Mythologies in village gatherings. Mahanando’s first wife Hemanginiwas childless. His second wife Mrinalini gave birth to five children, Bibhutibhushan being the eldest.
After attending a number of village schools, ‘pathsalas’ as they were called, in 1908 Bibhutibhushan was enrolled in class five of Bongaon High School from where he passed his matriculation in the first division in 1914.. But before he could pass out from high school, the untimely death of his father put him into severe financial hardships. He had to take up a house-tutor’s job in a wealthy doctor’s family to make ends meet. The financial adversities magnified when he entered Ripon College in Kolkata. Struggling against the economic odds, he managed to pass I.A. in the first division in 1916 and B.A. with Distinction in 1918. In the same year, he enrolled himself for a post graduate degree in Philosophy at Calcutta University as well as for a law degree in its Law College but because of financial and other compulsions could complete neither courses.
Bibhutibhushan married Kali bhushan Mukhopadhyay’s daughter Gauri on August 15, 1917. When the couple got married the groom was still in his first year of Bachelors’and the bride was just fourteen. Next July, after completing his B.A. examination, Bibhutibhushan took his young wife to his ancestral home in Barakpur to start a conjugal life. His first marital stint, however, ended suddenly in November when Gouri died of Pneumonia (Cholera, according to some sources) while visiting her parents in Panitar.
After Gauri’s death, Bibhutibhushan left his studies and took up the profession of a school teacher. He remained in this profession all through his life, albeit with occasional intermissions. His career as a school teacher started at Jangipara School in Hoogly at a monthly salary of fifty rupees. Serving the school from February, 1919 to May, 1920 he left the job to join Harinabhi High English School in Sonarpur in June, 1920 and worked there till July 1922. The compulsive traveler, inculcated by his father, who lived in Bibhutibhushan probably induced him to take up an assignment with ‘Gorakshani Sabha’ involving extensive travel and a campaign to protect the Holy Cow. Seizing the opportunity, Bibhutibhushan traveled widely in East Bengal, Tripura. Assam and Arakan, sometimes by train, sometimes by boat and often on foot, till the end of 1922. He came back to Kolkata in January, 1923 and took up a house-tutor’s job in the household of Zamindar Khelat chandra Ghosh of Pathuriaghata. A year later he accepted the job of supervising the vast forest estate of Khelatchandra in Northern Bihar as his Estate Manager and moved on to Bhagalpur. It was here in Bhagalpur that he started writing his masterpiece PatherPanchali and met eminent editors like Upendranath Ganguly of Bichitra and Sudhirchandra Sarkar of Mouchak. Indeed it was his experience with the jungle folks that inspired him to write his other masterpiece Aranyak more than ten years later.
Bibhutibhushan’s first published story came out in Prabasi in early 1922 followed by a few more during the course of the next six years. Ten of his early stories, seven of which were published in Prabasi and three in Bichitra, were later put together in a book called Meghmallar. The stories of Meghmallar were of an older vintage than Pather Panchali though the collection was published in 1931, two years after Pather Panchali was published as a book.
In April, 1928 Bibhutibhushan came back to Kolkata and started living in his old mess Paradise Lodge at 41 Mirzapur Street where he got his college mate Nirod chandra Chowdhury as his neighbour. In the same month, the manuscript of Pather Panchali was submitted to Bichitra for possible publication. The novel came out serially in Bichitra from July, 1928 to September, 1929 and was well-received by the readers. Yet no established publisher was willing to publish the work of a young novelist. Nirod chandra introduced Bibhutibhushan to Sajanikanta Das who quite enthusiastically published Pather Panchali from his new publishing house Ranjan Prakashalay. Pather Panchali came out as a book on October 2, 1929 on the auspicious day of Mahalaya and quite appropriately Bibhutibhushan dedicated it to his father as ‘pitritarpan’.A memoir of Sajanikanta’s wife Sudharani informs us that Bibhutibhushan got an honourarium of three hundred rupees from Sajanikanta for the first edition of Pather Panchali.
According to Bibhutibhusan’s journals,the author conceived Aparajito, the sequel to Pather Panchali,on November 14, 1929 in Eden Gardens, Kolkata in astate of pensive repose. The novel was serially published in Probasi from December, 1929 to September, 1931. The first part of the novel came out as a book in January and the second part in March of 1932. The publisher, once again, was Sajanikanta Das. Pather Panchali and Aparajito got spontaneous applause from a wide range of critics. In April 1933 Rabindranath Tagore invited Bibhutibhushan to visit him at Prasanta Mahalanobis’ residence Amprapali in Baranagar. In the same month, the poet’s critical appreciation of Pather Panchalicame out in Porichoy.
The publication of Pather Panchali and Aparajito were followed by several other masterpieces. His novels ― Drishti pradeep (1935), Chander Pahar (1938), Aranyak (1939), Adarsha Hindu Hotel (1940), Anubartan (1943), Debjan (1944) and Ichhamati (1950) ―have all survived the tough test of time. His short story collections ―Meghmallar (1931), Janma o Mrityu(1937), Kinnordal (1938), Talnabami (1944), Upalkhanda (1945) Khshanabhangur (1945) and Asadharan (1946), among others, have found permanent places in the rich ensemble of Bengali short stories. Bibhutibhushan wrote regular diaries. He published his daily memoiresin a number of chronicles ― Smritir Rekha (1941), Trinankur (1942), Urmimukhar (1944) and Utkarna (1946) each of which is a great read in its own right.
Bibhutibhushan’s stay in North Bihar hadinstilled in him a deep love for the wild which in turn induced him to visit the Ghatshila and Galudi regions of Bihar quite regularly. His frequent sojourns finally led him to buy a house in Ghatshila. In memory of his deceased wife, he named the house Gouri kunja. His trips to the wild were narrated in his travelogues Bone Pahare (1945) and Hey Aranya Katha Kao (1948).
Bibhutibhushan married Rama Chattapadhyay, daughter of Shoroshi kanta Chattopadhyay, an excise officer posted in Bongaon, on December 17, 1940. In 1942, he settled in Bangaon-Barakpur with his second wife. But whenever he got a chance he spent time in Ghatshila where his younger brother Nutbehari practiced medicine and lived with wife Jamuna. Bibhutibhushan’s only son Taradas was born in 1947.
On November 1, 1950, Bibhutibhushan died in Ghatshila of a sudden heart attack.